মাসুদ রানা,বরিশাল : দীর্ঘদিন গোপন থাকা বিছিন্ন এলাকা বরিশাল-ভোলা সীমানার মেঘনা নদীতে জেগেওঠা চরের সন্ত্রাসের খবর প্রতিদিনের সংবাদ পত্রিকার কাছে ফাঁস হয়ে যাওয়ায় প্রতিপক্ষকে সন্দেহ করে রশিদ মাঝি নামে একজনকে পিটিয়ে এলাকাছাড়া করেছেসামছু-তারেক লাঠিয়াল গ্যাং। ভয়ে নিজ এলাকায় চিকিৎসাও নিতে পারেনি। ঢাকা গাজীপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। প্রান ভয়ে এ বিষয়টিও আড়াল করে রাখেন ওই ভূক্তভোগি। তিনি মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার পূর্ব সুলতানি ইউনিয়নের কালিগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা। প্রকাশ থাকে,বরিশাল ভোলা মেঘনা নদীর সীমানায় সামছু-তারেক বাহিনীর সন্ত্রাসে গৃহহীন হয়ে পড়েছে দুই জেলার লাখো কৃষক। এমনকি জেলা দুটির মেহেন্দিগঞ্জ ও ভোলা সদর অংশের সীমানা নির্ধারন করতে পারছে না প্রশাসন। অন্যদিকে আধিপত্য বিস্তার ও পাঁচ হাজার একর চরের বিশাল স¤্রাজ্যের নিয়ন্ত্রন ধরে রাখতে লাঠিয়াল বাহিনীর তিন শতাদিক সদস্যের দুটি দল বিভিন্ন সময়ে অস্ত্রসহ ভয়ার্ত রুপে মহড়া দিয়ে ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। হামলা-মামলার বেড়াজালে ফেলে কৃষকদের তাড়িয়ে দিয়ে মহিষ পালন করা হয় সেখানে। এদিকে আতংক গ্রস্থ হয়ে প্রান বাঁচাতে” এলাকা ছেড়ে ঢাকা কিংবা বরিশাল শহর’র ভাড়া বাড়িতে থাকে অনেকে । আবার কেউ কেউ বস্তিতে ও সরকারি ‘আশ্রয় প্রকল্পে’ বসবাস করছে । একইসাথে এই দুই সন্ত্রাসীর স¤্রাজ্যের মধ্যকার নদীতে মাছ ধরতে হলে কোটি টাকা দাধন দিতে হয় জেলেদের। অন্যথায় জলদস্যূদের ফাপরে ফেলে মুক্তিপন আদায় করা হয়। কেউ প্রতিবাদ করলে কুপিয়ে-পিটিয়ে নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হয়। সেখানকার সাধারণ মানুষের আর্তনাদ’র আওয়াজ থানা পুলিশ জানলেও অদৃশ্য নানান পরিস্থিতিতে একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তারকারি এ সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ব্যবস্থ্যা নিতে পারছে না। সরেজমিনে ঘুরে ভূক্তভোগিরা জানান, বেশিরভাগ সময়ে থানা পুলিশ মামলা নেয় না। তাই ভয়ে আতংকে ত্যাক্ত/বিরক্ত হয়ে নির্যাতনের শিকার মানুষেরা থানা পুলিশের কাছে অভিযোগ নিয়ে যাচ্ছে না। সামছু-তারেক বাহিনীর সাথে সেকেন্ড ইন কমান্ডার হিসেবে ত্রাসে সক্রিয় অংশ নেয়,ইউপি সদস্য জয়নাল ,কৃষ্ণ মজুমদার,অহিদ সরদার,তারেকের খালাতো ভাই মোশারেফ,আলমগীর,রাসেল,রাকিব। গোবিন্দপুরের আশ্রয়ন প্রকল্পে থাকা অধিকাংশ যুবকদের এবং উলানিয়া-পাতারহাট এলাকার বেকার যুবকদের ব্যবহার করে এ লাঠিয়াল বাহিনীতে। নিজস্ব ট্রলার ও স্প্রিড যোগে সময়ে অসময়ে টেডা-ধারালো দা এবং অস্ত্র নিয়ে মহড়া দেয়। অসমর্থিত সূত্রের দাবি, এই লাঠিয়াল গ্যাং নোয়াখালি অঞ্চলের জলদস্যূদের কাছ থেকে বেশ কয়েকটি পিস্তল এনেছে। যে গুলো চরে মহড়া দেওয়ার সময় ব্যবহার হয়। এদিকে চরে পালিত পশুর বাৎষরিক টাকা না দিলে গরু-মহিষ-ছাগল ও কৃষি কাজের ট্রাক্টর নিয়ে আসে গোবিন্দপুর ক্যাম্পে। সেখানে কয়েকদিন অপেক্ষার মধ্যে কৃষক টাকা না দিলে নিকট-বর্তী নোয়াখালির একটি চক্রের কাছে বিক্রি করে দেওয়া হয়। একই সাথে বেশ কয়েকটি স্পটে চরের মধ্যকার ছোট ছোট নদীর মতো রয়েছে। জোয়ারে মাছ ঢুকে পড়ে সেখানে। একেক মৌসুমে ৫০ লাখ টাকা করে দাদন দিয়ে মাছ ধরতে হয় জেলেদের। ১২/১৩ টি ইলিশের মাছ ঘাটও তাদের নিয়ন্ত্রনাধীন। এছাড়া কৃষি মৌসুম আসলেই কৃষকের ধান-সবজি কেটে নিয়ে যায় তারা। এ বিষয়ে প্রতিদিনের সংবাদ পত্রিকার প্রতিবেদক বরিশাল বিভাগীয় কমিশনারসহ উর্ধতন কর্মকর্তাদের সাক্ষাতকার নিলে এখানকার ডিআইজি শফিকুল ইসলাম দুর্ঘম চরে পরিদর্শনে যান। সাংবাদিক পুলিশ এ তথ্য কিভাবে জেনেছে সে সন্দেহে প্রতিপক্ষ রশিদ মাঝিকে বেদড়ক পিটিয়েছে তারেক ও সামসু গাজী’র লাঠিয়াল গ্যাং। এবিষয়ে রশিদ মাঝি বলেন,সাংবাদিক পুলিশ তথ্য জেনে চর পরিদর্শনে যান। সে তথ্য আমার কাছ থেকে ফাঁস হয়েছে বলে অভিযোগ এনে আমাকে পিটিয়ে এলাকা ছাড়া করেছে। অথচ কোন সাংবাদিক পুলিশের সাথে আমার কোন কথা হয়নি। এ বিষয়ে চর দখলে থাকা লাঠিয়াল নেতা সামছু গাজী বলেন,আমি হামলা করিনি। লাঠিয়াল নেতা তারেক পিটিয়েছে। তবে মোবাইল কল রিসিভ না করায় তারেকের কাছ থেকে কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি। বরিশাল ডিআইজি শফিকুল ইসলাম বলেন,এরকম কোন ঘটনা ঘটে থাকলে ভূক্তভোগি মামলা করতে আসুক ।আমি ব্যবস্থা নেব।
জাতীয়, বিশেষ প্রতিবেদন, মিডিয়া, লিড নিউজ