রাহাদ সুমন, বিশেষ প্রতিনিধি : প্রাণঘাতি করোনার প্রাদুর্ভাবে লকডাউন পরিস্থিতির মধ্যে বোরো ধান ঘরে তোলার সময় হয়েছে। করোনা সংক্রমণ ছাড়াও আগাম বন্যার আশঙ্কায় পাকার সঙ্গে সঙ্গে অল্প সময়ের মধ্যেই ধান সংগ্রহ করতে হবে। কিন্তু লকডাউনের কারণে শ্রমিকের অভাবে যাতে ফসল নষ্ট না হয় এবং দেশ খাদ্য সংকটে না দেখা দেয় সেজন্য সবাইকে কৃষকের পাশে থাকতে আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা । ইতোমধ্যে দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় এমপি,ডিসি,ইউএনও,কৃষকলীগ,স্বেচ্ছাসেবকলীগ, ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক- কর্মচারী ও ছাত্ররা কৃষকের শ্রম ও ঘামের বিনিময়ে অর্জিত ফসল রক্ষার্থে স্বেচ্ছাশ্রমে তা ঘরে তুলে দিচ্ছেন যা দেশের ইতিহাসে মাইলফলক হয়ে থাকবে। এরই ধারাবাহিকতায় বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলার সৈয়দকাঠি ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী এসইএসডিপি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারী ও ছাত্ররা স্বেচ্ছাশ্রমে কৃষকের পাশে দাঁড়িয়ে ধান সংগ্রহ করার কাজ শুরু করেছেন। বুধবার(২৯ এপ্রিল) সকাল ৭টায় বিদ্যালয় সংলগ্ন জমিতে প্রধান শিক্ষক মিলন কান্ত সরকার(মলয়)’র নেতৃত্বে ১৫ সদস্যের ১নং টিম উপকারী কৃষক হুমায়ুন মৃধার ১০০ শতাংশ জমির ধান সংগ্রের উদ্বোধন করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সৈয়দকাঠির ইউপি চেয়ারম্যান আ. মন্নান মৃধা, ৪নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আমিনুল ইসলাম রাজু, ৫নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জাহিদুল ইসলাম কাজল প্রমুখ।
এ প্রসঙ্গে প্রধানশিক্ষক মিলন কান্ত সরকার জানান, ফসল তোলার কাজে কৃষককে সহযোগিতা করলে কৃষক সঠিক সময়ে ধান সংগ্রহ করতে পারবে। ফলে দেশে খাদ্য সংকট হবে না। খাদ্যের অভাব না হলে আমাদের মনে থাকবে সাহস, ফলে সহজেই মহামারী করোনাভাইরাসের সঙ্গে প্রতিরোধ যুদ্ধে জয়ী হতে পারবো। কৃষকরা তাড়াতাড়ি ফসল ঘরে তুলতে পারলে পরবর্তী ফসলের জমিও তাড়াতাড়ি প্রস্তুত করতে সক্ষম হবে। তিনি আরো জানান, কয়েকটি টিমের মাধ্যমে আমাদের এ ধান সংগ্রহের কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। বানারীপাড়া উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা জালিস মাহমুদ জানান চলতি বোরো মৌসুমে এ উপজেলায় ৫হাজার ২শ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ হয়েছে। গড় ফলণ ৫.৫। উপজেলায় এ বছর বোরো ধানের বাম্পার ফলণ হয়েছে। সঠিক সময়ে কৃষক এ ধান ঘরে তুলতে পারলে স্থানীয় চাহিদা মেটানোর পরেও উদ্বৃত্ত্ব থাকবে।
প্রসঙ্গত প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা কৃষকের ধান ঘরে তুলতে সাহায্য করার জন্য করোনা লকডাউনের মধ্যেও শ্রমিকরা যাতে নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারে এ জন্য সবাইকে কৃষকের পাশে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। সরকার এরই মধ্যে প্রয়োজনীয় সার বিনামূল্যে কৃষকদের মাঝে বিতরণ শুরু করেছেন। এই মৌসুমের শুরুতে কৃষকের ধানের বাজার মূল্য কম থাকার কারণে হাতে পর্যপ্ত টাকা না থাকায় ধান চাষে কিছুটা অনীহার কারণে অনেক জমি অনাবাদী রয়েছে। সরকার এ ব্যাপারে কৃষি বিভাগে আলাপ-আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নিয়েছেন।