.শিশু ও নারী বান্ধব এ আদালত ভবন প্রধানমন্ত্রীর হাতে উদ্ভোধন’র দাবি
.দ্রæত কার্যক্রম শুরু হলে করোনা ঝুঁকি থেকে মুক্তি মিলবে বিচারক-আইনজীবীসহ সাধারন মানুষের
.গতি ফিরবে বিচার কার্যক্রমে
মাসুদ রানা, বরিশাল পিপলস : উদ্ভোধনের অপেক্ষায় বরিশাল চীপ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের নব নির্মিত আধুনিক ভবন। বিচারিক কার্যক্রমের সুবিধার্থে বড় পরিসরের ১৩টি এজলাস কক্ষ-লিফট-সোলার প্যানেল-ভার্চুয়াল লাইন-শিশুদের মিল্ক ফিডিং’র জন্য মায়েদের আলাদা কক্ষ,গাড়ি পার্কিং সহ ১০তলা বিশিষ্ট বহুতল ভবনটি জুড়ে সব ধরনের ডিজিটাল ব্যবস্থা রেখে ভবনটি প্রস্তুত করে হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সবাই এখন অপেক্ষার প্রহর গুনছেন আনুষ্ঠানিক উদ্ভোধন’র মধ্য দিয়ে যাত্রা শুরু হবে কবে? সেক্ষেত্রে এখানকার রাজনীতিবিদ সহ বিচার কার্যক্রমের সাথে সংশ্লিষ্ঠ সবারই দাবি অনলাইনে ভার্চূয়াল পদ্ধতিতে হলেও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরিশালের বহুতল আধুনিক আদালত ভবনটি উদ্ভোধন করবেন। এ দাবি দ্রæত বাস্তবায়ন ও বরিশাল জেলা আইনজীবী সমিতির নেতারা আইনমন্ত্রীর মাধ্যমে চেষ্টা চালাচ্ছেন । আর এ উদ্ভোধনের মধ্য দিয়ে বিচার প্রার্থী-বিচারক- আইনজীবী- নাজির-পেশকারসহ সংশ্লিষ্ট সকলেই আদালত পাড়ায় কোভিড-১৯’র স্বাস্থ্য ঝুকি থেকে মুক্ত হবেন। পাশাপাশি মামলার বিচারিক কার্যক্রমে আরো গতি ফিরে আসবে বলে এমনটাই প্রত্যাশা সবার।
বরিশাল আদালতের এপিপি এ্যাড.ওয়াদুদ জানান, বরিশাল চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের অবকাঠামো সংকটের কারনে জেলা জজ আদালতের ছোট ছোট একই এজলাসে একাদিক বিচারক বিচার কার্যক্রম পরিচালনা করতে হচ্ছে । এই একই কারনে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের শূন্য পদও পূরন করা সম্ভব হচ্ছে না। আর বিচার চলাকালীন সময়ে মামলা ফাইল কল হওয়ার অপেক্ষায় থাকা আইনজীবীরা তো ঠাসা ঠাসি করে দাড়িয়ে থাকতে হয়। অন্যদিকে বিচার প্রার্থীরাও একইভাবে এজলাসের সামনে থাকা ছোট বেলকনিতে ঠাসা ঠাসি করে দাড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। বিশেষ ভোগান্তিতে পড়ছেন শিশুর মায়েরা আদালতে আসলে। এসব সমস্যার বাইরেও আবার বর্তমানে নতুন করে যোগ হয়েছে করোনা ঝুঁকি। লকডাউন শেষে আদালত কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর থেকে করোনা স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলতে পারছেন না কেউ। যার দরুন মারাত্মক স¦াস্থ্য ঝুঁকিতে আছেন ম্যাজিস্ট্রেট,আইনজীবী ও বিচার প্রার্থীরা। সবকিছু মিলিয়ে এখন দাবি উঠেছে দ্রæত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবনটি উদ্ভোধন করা। ভবনটির নির্মান দ্বায়িত্বে থাকা বরিশাল গনপূর্ত অফিসের উপ-প্রকৌশলী ইঞ্জি.এইচ এম ইউসুফ জানিয়েছেন, বিচার কার্যক্রমের সাথে সংশ্লিষ্টদের দাবির প্রেক্ষিতে ২০১৫ সালে ৩৪কোটি ৪০ লাখ টাকা ব্যয়ে আধুনিক ১২ তলা ফাউন্ডেশনের চীফ জুডিসিয়াল আদালত ভবনের উদ্ভোধন করা হয়। তবে গনপূর্ত মন্ত্রনালয়ে বরাদ্দের নির্দেশনা অনুযায়ী ভবনটির মুল অবকাঠামোসহ ১০ তলা পর্যন্ত সম্পন্ন করা হয়েছে। এতে ১৩টি এজলাস কক্ষ করা হয়েছে। বিস্ময়কর বিষয় হচ্ছে,ভবনটির ফায়ার সেফটির স্থাপন করা হয়েছে আধুনিক ব্যবস্থা। অটো পদ্ধতিতে পুরো ভবনের প্রতি তলায় পানি বের হয়ে আগুন নিয়ন্ত্রনে আসবে। অন্যদিকে বিদ্যুতের কারনে বিচার কার্যক্রম যাতে ব্যাহত না হয় সে জন্য পাওয়ার সাবষ্টেশন, জেনারেটর ও ছাদ জুড়ে রাখা হয়েছে সোলার প্যানেল। এছাড়াও আদালতে বিচার পেতে আসা মায়েদের কথা চিন্ত করে শিশুর মিল্ক ফিডিং’র জন্য আলাদা কক্ষ’র ব্যবস্থা করা হয়েছে। পাশাপাশি নামাজ ঘর,লাইব্রেরী ও বিচার প্রার্থীরে বসার স্থান রাখা হয়েছে। নতুন এ বহুতল ভবনটিতে উঠা নামার জন্য সিড়ির পাশাপাশি তিনটি ইউরোপিয়ান গøাস সিষ্টেমের লিফট। নিচতলায় রয়েছে গাড়ি পার্কিং ব্যবস্থা। সরেজমিনে দেখা গেছে আধুনিক ভবনটি উদ্ভোধন হলে বিচারকরা দীর্ঘ দিনের ভোগান্তি কাটিয়ে স্বাচ্ছন্দে বিচার কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবেন। এদিকে নবনির্মিত এ ভবনটির ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান পলি ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পোরেশনের প্রোপাইটার মো: সুমন জানান, আদালত ভবনটির মুল কাজ ২বছর আগেই শেষ হয়েছে। ফার্নিচার-ডেকরেশেন-পানি-বিদ্যুৎ’র কাজও শেষ হয়েছে অনেক আগেই। তবে করোনার কারনে ইউরোপ থেকে লিফট আসতে দেরি হয়েছে। এখন লিফটও বরিশাল এসে পৌছেছে। স্থাপনের কাজ এক মাসের মধ্যে কাজ শেষ হবে। যেহেতু অন্যসব কাজ শেষ হয়েছে,তাই আদালত ভবনটি উদ্ভোধন করলেই হয়। একাদিক প্রকৌশলী জানিয়েছেন,বাংলাদেশে এ ধরনের আধুনিক ভবন নির্মান হয়েছে হাতে গোনা দু-একটি। তার মধ্যে বরিশালে এটাই প্রথাম। বরিশাল জেলা আ’লীগের সধারণ সম্পাদক সাবেক সাংসদ এড.তালুকদার মো: ইউনুস ও মহানগর আ’লীগের সভাপতি ও জজ আদালতের পিপি এড.কে এম জাহাঙ্গীর, জিপি ও শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাদ প্রেসক্লাবের সভাপতি এড. নেগাবান মন্টু একই বক্তব্য রেখে এ প্রতিবেদককে জানান,আমরা বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মাধ্যমে নতুন ভবনটি উদ্ভোধনের চেষ্টা চালাচ্ছি। কারন তিনিই আমাদের বরিশালবাসীকে এ আধুনিক ভবনটি উপহার দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী এ ভবন উদ্ভোধন না করলে আমাদের প্রত্যাশা পূরন হবে না। আর দ্রæত উদ্ভোধন করা হলে বিচার প্রার্থীদের ভোগান্তি যেমনি দুর হবে,তেমনি বিচারকসহ সবাই আদালতে উপস্থিতের সময় করোনার স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলতে পারবো।