আত্ম-কেন্দ্রিকতা ও বিভাজনের এই যুগে “ছিন্নমূল এবং প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠির জীবন পরিবর্তনে যত কিছু লাগে, প্রত্যেক কাজে বরগুনা জেলার পাথরঘাটা রায়হানপুর গ্রামের ড.রেজাউল কবির অবদান রাখার চেষ্টা করছেন। তিনি এবং তার প্রতিষ্ঠান যে সেবা দেয় না কেন, পাথরঘাটা তথা বরগুনার মানুষ কোন না কোন ভাবে তার সাথে জড়িত। বিশেষ করে প্রত্যন্ত অঞ্চলে প্রান্তিক প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীর নারী ও শিশুদের দ্বারপ্রান্তে শিক্ষা পৌঁছে দিচ্ছেন। এভাবে এক এক করে কাজের পরিধি বেড়েছে, এবং ক্রমে কাজের গণ্ডি বাড়ার সাথে সাথে সমাজে তার ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। এনিয়ে একটি প্রতিবেদন করেছেন-সাংবাদিক মাসুদ রানা
সমাজের অধিকার বঞ্চিত ছিন্নমূল মানুষদের আলোর পথ দেখানোর এক উদীয়মান সূর্য ডিজএবল ডেভেলপমেন্ট এন্ড এডুকেশনাল ফাউন্ডেশন (ডিডিইএফ)। এখানে দরিদ্র অবহেলিত প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠির সামগ্রিক উন্নয়নের পাশাপাশি স্বাস্থ্য সেবা,মাদক ও ধুমপান বিরোধী কার্যক্রম, বাল্য বিবাহ ও ইভটিজিং সংক্রান্ত কাজে এডভোকেসি প্রোগ্রাম। পয় ও পানি নিষ্কাশন, কৃষি উন্নয়নসহ শিক্ষা,গণশিক্ষা,বয়স্ক শিক্ষা ও নৈতিক শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে। অন্ধকার থেকে আলোর পথে নিয়ে আসার এ কাজটি করে যাচ্ছেন বরগুনা পাথরঘাটা উপজেলার রায়হানপুর গ্রামের এ সেচ্ছসেবি সংগঠনটি। এর বাইরেও শীতবস্ত্র বিতরণ, রক্তদান, স্বাস্থ্যসেবা ও সচেতনতা বৃদ্ধিসহ আলোকিত দেশ গঠনে কাজ করে যাচ্ছেন । সুবিধাবঞ্চিত ও প্রতিবন্ধী মানুষেরা আনন্দের সাথে সেবা নিচ্ছেন।
২০০১সালের পহেলা জানুয়ারী শুরু হওয়া সমাজের সুবিধা বঞ্চিত ও প্রতিবন্ধী মানুষদেও জন্য ব্যতিক্রমধর্মী এ প্রতিষ্ঠানটির যাত্রা। এখানে বর্তমানে ৫৪জন প্রতিবন্ধী পড়াশুনা করছে। এখানে মায়ের মমতা ও বাবার স্নেহ দিয়ে পড়ানো হচ্ছে। বিনা পয়সায় এ পাঠশালায় পড়াচ্ছেন তারা। এ প্রতিষ্ঠান থেকেই শিশুশিক্ষার্থীদের দেয়া হয় বই খাতাসহ শিক্ষা উপকরণ। যারা এখানে পাঠদান করছেন তারাই সবাই পেশাজীবী। তারা কাজ শেষে কেউবা প্রাতিষ্ঠানিক কাজকর্ম শেষে স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে এখানে উন্নয়নমুলক কাজ করেন। এই প্রতিষ্ঠানে যারা শিক্ষকতা করছেন তারা সবাই ডিডিইফ সংগঠনের সদস্য। অক্ষর জ্ঞান ছাড়াও এখানে নৈতিক বিষয়ে শিক্ষা প্রদান করেন শিক্ষকরা। সরেজমিনে খোজ নিয়ে জানা গেছে, ডিডিইফ ৩২০০ ঠোটকাটা ও তালুফাটা প্রতিবন্ধী ব্যক্তির বিনামূল্যে সার্জারী অপারেশন কাজে সহযোগিতা , বিনামূল্যে ৮০০ হুইল চেয়ার, ২০০ সাদা ছড়ি, ২৫০টি সেলাই মেশিন বিতরণ। ৪০ জন ক্যান্সার রোগীকে এককালীন আর্থিক অনুদান প্রদানে সহযোগিতা করণ। সম্পূর্ণ বিনামূল্যে ৪০০০ ব্যক্তির মাঝে কম্বল ও শাড়ি-লুঙ্গি বিতরণ। ৫০০ রোহিঙ্গা পূর্নবাসন কার্যক্রমে খাদ্য বিতরণ ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সহায়ক উপকরণ বিতরণ।
বিভিন্ন সময়ে এককলানী আর্থিক অনুদানসহ চিকিৎসার সুযোগ পেয়েছে প্রায় ৫০০জন পুরুষ মহিলা। এছাড়াও দূযোর্গকালীন সময় সহযোগিতাকরণ। গ্রামের দরিদ্র ৫৪ জন প্রতিবন্ধী শিশু বিশেষ শিক্ষার সুযোগ পাচ্ছে। সৃষ্টি হয়েছে কর্মসংস্থানের। কাজ পেয়েছে প্রতিবন্ধী ব্যক্তি। সংস্থাটির টেকসই উন্নয়নে ভুমিকা পালন করতে কিংবা কার্যসম্পাদনে দেশি ও বিদেশী বিভিন্ন দাতা সংস্থা সহযোগিতা করছে। চিন্তাধারা ও মতবাদের গভীর বিভাজনের এই সময়ে যে ব্যক্তিটিসংগঠনের মাঝি হিসেবে হাল ধরে আছেন তিনি প্রতিষ্ঠাতা ড. মোঃ রেজাউল কবির । “মানুষের জীবন পরিবর্তনে যত কিছু লাগে, প্রত্যেক কাজে তিনি অবদান রাখার চেষ্টা করছেন। তার প্রতিষ্ঠান যে সেবা দেয় না কেন, বরগুনা তথা পাথরঘাটার মানুষ কোন না কোন ভাবে তার সাথে জড়িত। বিশেষ করে প্রত্যন্ত অঞ্চলে প্রান্তিক প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীর নারী ও শিশুদের দ্বারপ্রান্তে শিক্ষা পৌঁছে দিচ্ছেন। “এভাবে এক এক করে কাজের পরিধি বেড়েছে, এবং ক্রমে কাজের গণ্ডি বাড়ার সাথে সাথে সমাজে তার ব্যাপক প্রভাব পড়েছে।”
তিনি একান্ত সাক্ষাৎকারে এ প্রতিবেদককে বলেন,পেটের তাগিদে চাকুরি করি। কিন্তু যখনই সময় পাই আমি তখনই স্বেচ্ছাসেবি এ সংগঠনটির মাধ্যমে মানুষকে কিভাবে সেবা করা যায় তার পরিকল্পনা করি। ইতোমধ্যে সংস্থাটি দেশি বিদেশি বিভিন্ন দাতা সংস্থার সহযোগিত পেতে শুরু করেছেন। ভবিষ্যতে ডিডিইএফ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে দেশের সব অঞ্চলের অবহেলিত মানুষদের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিবেন বলে জানান এ প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা ড. মোঃ রেজাউল কবির ।
আন্তর্জাতিক, বিশেষ প্রতিবেদন, লিড নিউজ