মাসুদ রানা ,বরিশাল : বরিশাল মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার বাহাদুরপুর গ্রামে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে এক ইউপি সদস্যের বাড়িতে ডাকাতির ঘটনার নাটক ফাঁস হয়েছে। যার দরুন রক্ষা পেয়েছে এলাকার নিরীহ সাধারণ মানুষ । মুলত ডাকাতির নাটক সাজানোর রাতে সেখানকার কোস্টগার্ডের অভিযানে অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনা ধামাচাপা দিতে প্রতিপক্ষকে ফাসাঁতে এই ডাকাতির নাটক সাজানো হয়েছে । মেহেন্দিগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ শফিকুল ইসলাম নিশ্চিত করে বলেন,ডাকাতির অভিযোগ দিলেও তথ্য প্রমানের কোন আলামত মিলেনি। স্রেফ বানোয়াট একটি অভিযোগ। প্রশাসনের কাছ থেকে বিষয়টি স্পষ্ট হওয়ার পর গ্রামবাসীর মধ্যে ফিরেছে স্বস্থির নিশ্বাস। তথ্যসূত্রে জানা যায়, মেহেন্দিগঞ্জ সদর ইউনিয়নের বাহাদুরপুর গ্রামের ইউপি সদস্য আমির হোসেন জমদ্দার ও তার ছেলে সোহাগ জমদ্দার বুধবার (১লা সেপ্টেম্বর ) রাত আনুমানিক ৩টার সময় ডাকাতির অভিযোগ করেন। সেসময় তাদের দরজার সিটকানী ভেঙে ১০-১২ জনের একটি মুখোশধারী ডাকাতদল ঘরে প্রবেশ করে দেশীয় অস্ত্রের মুখে তাদের জিম্মি করে । অভিযোগ ডাকাতদল ওয়ারড্রব, সুকেশ ভেঙে এবং নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার নিয়ে পালিয়ে যায় । ৭৫ হাজার টাকা এবং আনুমানিক ৪ভরি স্বর্ণ নিয়ে যায়। এসময় সোহাগকে হাত ও চোখ বেধে মারধর করতে করতে আনন্দবাজার নিয়ে যায়। পরে মানুষের টের পেয়ে ছেড়ে দেয়। তার বাড়ি থেকে প্রায় ১ কিলোমিটার দূরত্ব হবে আনন্দ বাজার। সোহাগ ও তার স্ত্রী বলেন, তারা ৪ জন ডাকাতকে চিনতে পেরেছেন। ডাকাতদল সোহাগকে হুমকি প্রদান করে তাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা পূর্বের একটি মামলা প্রত্যাহার করতে বলেন । সংবাদ পেয়ে মেহেন্দিগঞ্জ থানা থেকে ফোর্স ঘটনাস্থলে যান। পুলিশের টানা ৬ দিনের তদন্তে কোন বিশ্বাস যোগ্য আলামত মেলেনি ডাকাতি ঘটনার। উঠে আসে স্থানীয় দ্বন্ধের জের। এ কারনে অভিযোগটি আমলে নেওয়া হয়নি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একাধিক ব্যাক্তি জানান, ডাকাতির ঘটনাটি সাজানো ও পরিকল্পিত। প্রায় ২-৩ মাস পূর্বে ইউপি পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে চলমান বিরোধের জেরে ডাকাতির মিথ্যা অপবাদ দেওয়া হয় আজাদ ভূইয়ার পরিবারের বিরুদ্ধে। হামলা লুটপাট ও ভাংচুর’র অভিযোগটি ভিত্তিহীন। নির্বাচন নিয়ে উভর পরিবারের মধ্যে হামলা-মামলা চলে আসছে। এদিকে ঘটনার পরের দিন সকাল ১১ টায় কোষ্টগার্ড দক্ষিন জোনের মিডিয়া কর্মকর্তা আমিরুল হক বিএম একটি প্রেস রিলিজ দেন। এতে উল্লেখ করা হয় মেহেন্দিগঞ্জ সদর ইউনিয়নের ৯ নং বাহাদুরপুর গ্রামের গনেষপুর নদীর তীরবর্তী একটি টংঘর থেকে একটি দেশিয় পিস্তল উদ্ধার করা হয়। এছাড়াও কোষ্টগার্ড’র পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ওই রাতে সন্দেহভাজন হিসাবে মেম্বার’র ছেলে সোহাগ জমদ্দারকে বাড়ি থেকে আটক করা হয় পরবর্তীতে নির্দোষ প্রমাণীত হওয়ায় তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু তাদের বাড়িতে হামলা ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেনি। অপরদিকে সাংবাদিকদের কাছে মেম্বার’র বাড়িতে ডাকাতি অভিযোগের নেপথ্য কাহিনী তুলে ধরেন ওসি শহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, সেখানে একটি পরিবারের সাথে মেম্বার আমির জমদ্দার ও তার ছেলে সোহাগ জমদ্দার’র সাথে মামলা মোকদ্দমা চলছে। প্রতিপক্ষের উপর চাপ সৃষ্টি করতে এমনটা করেছে। পুলিশের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে স্থানীয়রা বলেন, ওসির দক্ষতায় সাজানো ডাকাতি মামলা থেকে রক্ষা পেলো নিরীহ মানুষ।
Uncategorized