ববি প্রতিনিধি : বিশ্ববিদ্যালয় (ববি) কেন্দ্রীয় খেলার মাঠের এক কোণে আগুন লাগিয়ে আগাছা পরিষ্কার করতে গিয়ে অর্ধ-শতাধিক বৃক্ষ পোড়ানোর অভিযোগ উঠেছে। এতে শিক্ষার্থীদের মাঝে তীব্র ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে।
শনিবার সাপ্তাহিক বন্ধের দিন সকাল সাড়ে ১১ টার মাঠ পরিষ্কার কর্মসূচি নাম দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিজিক্যাল ইনস্ট্রাক্টর মো: নুর ইসলামের নেতৃত্ব একদল কর্মচারী কেন্দ্রীয় খেলার মাঠের এক কোনে আগুন দেয়। এতে শহীদ মিনারের আশে-পাশে ও মক্তমঞ্চের পাশে লাগানো প্রায় অর্ধ-শতাধিক চারাগাছ পুড়ে যায়।
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে এমনিতে বড় কোন বৃক্ষ নেই। যেদিকে তাকানো যায় ধূ ধূ বালুকনায় দেখা যায়। গত জুন-জুলাই মাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সংগঠন, শিক্ষক-শিক্ষার্থী মিলে বিশ্ববিদ্যালয় সবুজায়নে সহস্রাধিক বৃক্ষ রোপণ করে। শিক্ষার্থীদের লাগানো গাছগুলো এমন হালায় পোড়ানোয় তারা তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
মৃত্তিকা ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সিয়াম জামান বলেন, “গত বছর রোজার সময় দুপুর বিকাল এক করে মুক্তমঞ্চ ও শহীদ মিনারের চারিদিকে কাঠ বাদাম ও কৃষ্ণচূড়া গাছ লাগিয়েছিলাম। বালতি ভরে পানি এনে সেই গাছ বাচিয়েছিলাম। পুকুর থেকে কচুরিপানা তুলে এনে সেই গাছের গোড়ায় দিয়েছিলাম। একটা গাছ বেড়ে ওঠা যতটা কষ্টের তা ধংস করা অনেক বেশিই সহজ। এই গাছের পিছনে টাকা শ্রম দিয়েছে ভার্সিটির ছাত্ররা, শিক্ষকগণ। আর আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মারল ভার্সিটির কর্মচারীরা। এর সুষ্ঠু তদন্ত করে বিচারের দাবি জানাচ্ছি।”
ঘাস কাটার নামে গাছ পোড়ানোর বিষয়ে জানতে চাইলে সহকারী এস্টেট অফিসার মো: সাইদুজ্জামান বলেন, “ফিজিক্যাল ইন্সট্রাক্টর আমাকে এই ব্যাপারে কিছু জানায় নি। তিনি নিজ উদ্যোগে আগুন দিয়েছেন। এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না।”
অভিযুক্ত ফিজিক্যাল ইনস্ট্রাক্টর মো: নুর ইসলাম বলেন, “খেলার মাঠের ওই অংশে ঝোপঝাড় ছিল। পরিস্কার করতে গিয়ে আমাদের কর্মচারীরা ওখানে সাপ দেখতে পায়। তাই আগুন লাগিয়ে পরিষ্কার করা হয়েছে। আমি একটি ভালো উদ্দেশ্য নিয়ে কাজটি করতে গিয়ে খারাপ হয়ে গেছে। কিছু চারাগাছ পুড়ে গেছে। এজন্য আমি আন্তঃরিক ভাবে দু:খিত।
তিনি আরো বলেন, ঝোপঝাড়ের মাঝে বল আনতে গিয়ে যদি সাপে কামড় খেত, তাহলে সেই দায় কে নিত? ৫, ১০,৫০ টাকার গাছ কি একটি জীবনের চেয়ে বড়?”
উল্লেখ, মালীর জন্য দায়িক্তপ্রাপ্ত ৮ জন ব্যাক্তি থাকলেও এস্টেট অফিসারের দপ্তরে মাত্র ৩ জন আছে এবং বাকি ৫ জনের ২ জন উপাচার্যের দপ্তরে, ২ জন সিকিউরিটি শাখায়, ১ জন পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের দপ্তরে কর্মরত। এস্টেট শাখা দপ্তরে কর্মরত ৩ জন কর্মচারী ঠিকমত কাজ করেন না বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
আগুন দিয়ে গাছ পোড়ানোর ঘটনায় সাধারণ শিক্ষার্থীরা তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করছেন এবং আগুন দিয়ে গাছ পোড়ানোয় অভিযুক্তদের দ্রুত শাস্তির আওতায় আনার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানান
আইন-আদালত, আন্তর্জাতিক, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, লিড নিউজ