মাসুদ রানা : দুই পিএসর পিছনে টানা তিনদিন ঘুরেও বরিশাল সিটি মেয়র’র সাথে দেখা করার সিডিউল পায়নি ওবাইদুল ইসলাম নামে এক তরুণ বিজ্ঞানী । এতে স্বপ্নে বিভোর এই তরুন বিজ্ঞানী তার নিজ হাতে আবিস্কৃত “অটো ড্রেন ক্লিনার” নামের প্রযুক্তি উপহার দিতে না পারার বেদনা দুমড়ে মুচরে দিয়েছে মনের ভেতর লালন করা উদ্ভাবনী শক্তির আগ্রহকে। এমনটাই জানিয়েছেন এ প্রতিবেদককে। মুলত, লোকবল ছাড়াই একটি শহরের সবগুলো ড্রেন ও খালের ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করার জন্য “অটো ড্রেন ক্লিনার” নামে একটি যন্ত্র আবিষ্কার করেছে বাবুগঞ্জ উপজেলার মধ্যপাংশা গ্রামের তরুন বয়সী ওবাইদুল ইসলাম। যন্ত্রটি সেন্সরের বিশেষ সিগন্যালের মাধ্যমে জানা যাবে ড্রেনের কতটুকু জায়গায় ময়লা জমে আছে এবং স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রেশার পাম্প চালু হয়ে ড্রেনের ময়লা পরিস্কার করবে। এতে কোনো জনশক্তির প্রয়োজন হবে না। এ প্রযুক্তিটি দিয়ে যে কোন সিটির সবগুলো ড্রেন পরিস্কার করা সম্ভব বলে মনে করছেন এই তরুন। ফলে সাশ্রয় হবে সিটি কর্পোরেশনের কোটি কোটি টাকা । একইসাথে নগরীও ফিরে পেতে পারে এক নতুন রুপ। ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং এর উপর পড়ালেখা করা তরুন বিজ্ঞানী ওবাইদুল তার ইচ্ছার কথা জানিয়ে বলেন, “বিভিন্ন সময়ে ছোট ছোট প্রযুক্তি আবিস্কার করে আসছেন। তবে ‘অটো ড্রেন ক্লিনার’টি যেহেতু একটি বিশেষ ধরনের আবিস্কার, সেহেতু নিজ জন্মভূমির শহর বরিশাল সিটির মানুষের সুবিধার জন্য যাতে যন্ত্রটি কাজে লাগানো যায়, সেই ভাবনা-চিন্তা থেকে মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহ ভাইয়ের সাথে দেখা করার জন্য চেষ্টা করেছি ”। কিন্তু মেয়রের পিএস মিলন ভাই ও জিয়া ভাইয়ের সাথে যোগাগোগ করে কোন সিডিউল মিলছে না। কবে দেখা করতে পারবো তাও তারা না বলে এড়িয়ে যাচ্ছেন। তাদের কথার ধরনে মনে হচ্ছে, মেয়রের সাথে দেখা করে প্রযুক্তিটি সম্পর্কে অবহিত করা কিংবা তার পৃষ্টপোষকতায় এই প্রযুক্তিটি বরিশাল নগরীর উপকারে ব্যবহার করা যায় কিনা এ কথাটুকুন বলা আদৌ সম্ভব হবে না। এমনই হতাশা প্রকাশ করেন এ প্রতিবেদকের কাছে । বিভিন্ন মহলসহ সুশীল সমাজেও কথিত আছে, আগন্তুক কেউ মেয়রের সাথে দেখা করতে চাইলে কিংবা গুরুত্বপূর্ণ কোন বিষয়ে বলতে চাইলে পিএস মিলন কিংবা জিয়া তারা কেউই নগর পিতার সাথে দেখা করার জন্য সহসাই সুযোগ করে দেন না। এ নিয়ে ক্ষোভ আছে অনেকের মাঝে। তবে মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহ’র ঘনিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছেন, মেয়রের সাথে যে কেউ চাইলেই দেখা করতে পারে। তাহলে জটিলতা কোথায়? খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ‘অটো ড্রেন ক্লিনার’টি আবিস্কারের পর সারা দেশে হইচই পড়ে গেছে। বাবুগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন ইতোমধ্যে প্রযুক্তিটির ডকুমেন্টরি তথ্য ও প্রযুক্তি অধিদপ্তরে পাঠিয়েছেন। সেখান থেকে স¦ীকৃতি মিললে দেশ ও দেশের বাইরে সমাদৃত হতে পারে তার প্রযুক্তিটি । ওবাইদুল ইসলামের বাড়ি বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার মাধবপাশা ইউনিয়নের মধ্য পাংশা গ্রামে। পিতার অবহেলার কারনে মায়ের সঙ্গে টানাটানির সংসারে মামাবাড়িতে বেড়ে ওঠা। বাবুগঞ্জ পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভোকেশনাল শাখার জেনারেল মেকানিকস ট্রেড থেকে পাস করেন। পরে খুলনায় ম্যানগ্রোভ ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি থেকে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্স করেন। ইলেকট্রিক্যাল, ইলেকট্রনিকস ও মেকানিক্যাল কাজের ওপর তার বাস্তব দক্ষতা আছে।
মাসুদ রানা
বরিশাল প্রতিনিধি
দি নিউ নেশন
দৈনিক প্রতিদিনের সংবাদ
০১৭১৮-৬৬৬১২৬