বাংলাদেশের সন্তান আব্দুল কাদের সাগর ইলেক্ট্রনিক্স যন্ত্রের মাধ্যমে মানব দেহের কোষ থেকে মরণঘাতী রোগের জীবাণু উদঘাটনে একজন অগ্রযাত্রী ও উদ্ভাবক – যা নিঃসন্দেহে বিশ্বের চিকিৎসা বিজ্ঞানে এক বিস্ময়কর আশার আলো সঞ্চার করেছে। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের উইসকনসিন স্টেটের রাজধানী মেডিসনে অবস্থিত “ইউনিভার্সিটি অব উইসকনসিন” (আন্তর্জাতিক মান ১ থেকে ১৫ এর মধ্যে) থেকে “বায়ো-মেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং” (স্বল্প সময়ে ও স্বল্প মূল্যে মানব দেহের দূরারোগ্য ও মরণঘাতী রোগের জীবাণু মানুষের কোষ থেকে উদঘাটন)এর উপর পিএইচ ডি ডিগ্রি লাভ করেছে। এ খবরে পিতা তার অনুভূতি ফেসবুক পেইজে প্রকাশ করেন। বরিশাল পিপলস ডট কমের পক্ষ থেকে তা তুলে ধরা হলো :
৯ই ডিসেম্বর ২০১৯ রাত ১০:৩৮ মিনিট। আমার জীবনের সবচাইতে আনন্দের মুহূর্ত, স্মরণীয় ঘটনা। আমাকে কেউ বিনা শর্তে নগদ একশ কোটি টাকা প্রদান করলে আমি যতটুকু খুশি হতাম, তার চাইতে অনেক অ-নে-ক বেশি আমি আনন্দিত, উচ্ছসিত, উল্লসিত ও উদ্বেলিত। খুশির আনন্দাশ্রু যে কত সুখের, কত মধুর, কত খুশির ও কত উল্লাসের হতে পারে তা এই সুখ ভোগকারী ছাড়া অন্য কেউ বলতে বা উপলব্ধি করতে পারবেন না। আর এই সুখ বিশ্বের হাতে গোনা কয়েক জনাই ভোগ করেছেন – যা আমি পেয়েছি আজ রাত ১০ঃ৩৮ মিনিটের মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ।
আমার মনে হয় আমার মনের আবেগটা আর চেপে না রেখে প্রকাশ করে ফেলাই ভাল। আজ রাত ১০ঃ৩৮ মিনিটে যুক্তরাষ্ট্রের উইসকনসিন থেকে আমার একমাত্র সন্তান মোঃ আব্দুল কাদের সাগর আমাকেই প্রথম ফোন করে জানালো, “আব্বু, আমি আজ এবং এক্ষুনি পিএইচ ডি ডিগ্রি লাভ করলাম, আজ থেকে তোমার সাগর ড. আব্দুল কাদের সাগর”। খবরটা পাওয়ার পর আমার খুশির ঝর্ণাটা এতই বেশি উচ্ছসিত ছিল যার প্রকাশ পেয়েছিল খুব জোরে। আমি আনন্দে চিৎকার করে কেঁদে ফেলে আল্লাহর কাছে কোটি কোটি শুকরিয়া আদায় করেছি। খুশিতে কেঁদেছি। সেই মুহূর্তে আমার আনন্দটা এতটাই তীব্র ছিল যে, সে সময় শত কোটি টাকা আমাকে দিলে সেটিও আমার কাছে অনেক তুচ্ছ মনে হতো।
এখানে না বল্লেই নয় যে, আমাদের পরিবারের মধ্যে ভুরি ভুড়ি প্রখ্যাত রজনীতিবিদ্, সংসদ স্পীকার, মন্ত্রী, উপদেষ্টা, এমপি, জনপ্রতিনিধি, আমলা, ইঞ্জিনিয়ার, ডাক্তার, ব্যবসায়ী ও সমাজসেবী থাকলেও সাগরই একমাত্র প্রথম বিশ্বের প্রথম গ্রেডের ইউনিভার্সিটি থেকে নির্ধারিত ছয় বছরের এক বছর পূর্বেই অর্থাৎ পাঁচ বছরেই পিএইচ ডি ডিগ্রি বা ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করলো। এটিরও ছোট্ট একটা কৃতিত্ব রয়েছে সাগরের। পিএইচ ডি-তে ভর্তির পূর্বে জিআরই পরীক্ষায় সাগর সেই ব্যাচে বিশ্বের মধ্যে এত বেশি নাম্বার পেয়েছিল যে, এমএস না করেই সাগর সরাসরি পিএইচ ডি পড়ার সুযোগ লাভ করেছিল। দ্বিতীয় বর্ষে সাগর পিএইচ ডি ও এমএস একই সাথে করেছে। একটু বলে রাখা ভাল যে, পিএইচ ডি পাঠ্যাবস্হায় সাগর তার বিষয়ে বিশ্বের কয়েকজনের মধ্যে একজন স্বীকৃতিপ্রাপ্ত উজ্জ্বল নক্ষত্র।
পিএইচ ডি পঠ্যরতাবস্হায় অসামান্য কাজ করায় সাগর বিশ্বের অনেকগুলো “এ” গ্রেডের ইউনিভার্সিটি এবং উচ্চ মানের আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানে চাকুরীর অফার পেয়েছিল, এখনও পাচ্ছে। কিন্তু সাগর এখনো আমাকে জানায়নি যে, ভবিষ্যতে সে কি করবে। তবে আমার ধারণা – সে গবেষণাতেই থাকবে। কেননা, শিশুকাল থেকেই সাগর গবেষণায় খুবই উৎসাহী ও আগ্রহী।
আসল কথাটাই তো এখনো বলাই হয়নি। সাগর পিএইচ ডি ডিগ্রি লাভ করেছে, “বায়ো-মেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং” এর উপর যুক্তরাষ্ট্রের উইসকনসিন স্টেটের রাজধানী মেডিসনে অবস্থিত “ইউনিভার্সিটি অব উইসকনসিন” যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে – যেই ইউনিভার্সিটির আন্তর্জাতিক মান ১ থেকে ১৫ এর মধ্যে। ইলেক্ট্রনিক পদ্ধতিতে সহজেই স্বল্প সময়ে ও মূল্যে মানব দেহের দূরারোগ্য ও মরণঘাতী রোগের জীবাণু মানুষের কোষ থেকে উদঘাটন করাই পদ্ধতি আবিষ্কার করাই ছিল সাগরের পিএইচ ডি’র গবেষণার মূল বিষয় – যা চিকিৎসা বিজ্ঞানে বিশ্বে আলোড়ন সৃস্টি করেছে।
বুয়েটের ইলেক্ট্রনিক্স এন্ড ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এর অসাধারণ মেধাবী ছাত্র আব্দুল কাদের সাগর ইলেক্ট্রনিক্স যন্ত্রের মাধ্যমে মানব দেহের কোষ থেকে মরণঘাতী রোগের জীবাণু উদঘাটনে একজন অগ্রযাত্রী ও উদ্ভাবক – যা নিঃসন্দেহে বিশ্বের চিকিৎসা বিজ্ঞানে এক বিস্ময়কর আশার আলো সঞ্চার করেছে।
সাগরের মত বিশ্ববরেণ্য ও স্বীকৃতিপ্রাপ্ত একজন মেধাবী ও কৃতিসন্তানের পিতা হতে পেরে আমি নিজেকে একজন গর্বিত পিতা ও সৃষ্টিকর্তার প্রিয় বান্দা হিসেবে মনে করছি। সাগরকে শিশুকাল থেকে প্রকৃত মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য তার সর্ভধারিণী মার অক্লান্ত পরিশ্রম ও ত্যাগ অকল্পনীয় ও অতুলনীয়। সাগরের মা যদি তার নিজের জীবনের অনেক সুখ, আনন্দ ও চাহিদাগুলো বিসর্জন না দিত তাহলে হয়তো সাগর আজ এ পর্যায়ে পৌঁছাতে পরতো না। সাগরের জন্য আমি কিছুই করতে হয়নি। আমি অসহায় মানুষের কল্যাণে কিছু করেছি, বিনিময়ে সৃষ্টিকর্তা আমার সন্তানকে মানুষের মতো মানুষ করেছেন।
সাগরের জীবনের সামাজিক ও মানবিক কর্মকান্ডগুলোও কিন্তু অসম্ভব ধরনের। সে ছাত্রাবস্থায় একজন মেধাবী পথশিশুকে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়িয়েছে। সে বুয়েটে পাঠ্যরতাবস্হায় মারাত্মক অসুস্হ এক শ্রেণিবন্ধুকে সুচিকিৎসার জন্য প্রায় কোটি টাকা যোগাড় করে বিদেশে চিকিৎসা করিয়ে তাকে সুস্থ করিয়ে তুলেছিল। চিকিৎসার পর বেঁচে যাওয়া অবশিষ্ট ৩০ লক্ষ টাকা বুয়েটের শিক্ষার্থী কল্যাণ তহবিলে জমা প্রদান করেছিল। আমেরিকার উইসকনসিন স্টেটে বাংলাদেশীদের সাহায্যের জন্য একটি সরকারি নিবন্ধিত ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন গঠন করেছে সাগর – যার প্রতিষ্ঠাতা-সভাপতি সাগর।
আপনারা সবাই দোয়া করবেন, সাগর যেন আল্লাহর সৃষ্টির সেরা মানব জাতির উন্নতি ও কল্যাণ সাধনে নিজেকে উৎস্বর্গ করে বিশ্বে বাংলাদেশের সুনাম বৃদ্ধি করতে পরে।
সাগরের ইউনিভার্সিটিতে খুব শিগগিরই অনুষ্ঠিতব্য জাঁকজমক ও আড়ম্বরপূর্ণ সার্টিফিকেট গিভিং সেরিমনি বা সমাবর্তন অনুষ্ঠানে আমরা মিয়া-বিবি উপস্থিত থাববো – ইনশাআল্লাহ।
(গর্বিত পিতা বীর মুক্তিযোদ্ধা লায়ন এড. এম এ মজিদ সুপ্রীম কোর্টের এডভোকেট ও জাতীয় সাংবাদিক সোসাইটির চেয়ারম্যান)। আন্তর্জাতিক, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, মিডিয়া, লিড নিউজ